القران الکریم
التَّمْهِيدُ :
الْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِى هَدَانَا بِكِتَابِهِ الْمُنَزَّلِ وَالصَّلوةُ وَالسَّلَامُ عَلَى النَّبِيِّ الَّذِى أُنْزِلَ عَلَيْهِ الْفُرْقَانُ وَعَلَى الِهِ وَصَحْبِهِ أَجْمَعِينَوَمَن
تَبِعَهُمْ إِلَى يَوْمِ الدِّينِ -
تَعْرِيفُ الْقُرْآنِ :
الْقُرْآنُ هُوَ كِتَابُ اللهِ المُنَزَّلُ عَلَى الرَّسُولِﷺ بِوَاسِطَةِ جِبْرِيلَ (ع) الْمَكْتُوبُ فِى الْمَصَاحِفِ وَالْمَنْقُولُ عَنْهُ نَفْلًا مُتَوَاتِرا بِلا شُبهة -
كَيْفِيَّةُ نُزُولِ الْقُرْآنِ :
نَزَلَ الْقُرْآنُ مِنَ اللون الْمَحْفُوظ إلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا دَفْعَةٌ وَاحِدَةً ثُمَّ إِلَى مُحَمَّدٍ ﷺنَجْمًا نَجْمًا فِي حَيَاتِهِ النَّبَوِيَّةِ الْكَامِلَةِ عَلَى قَدْرٍ حَوَائِجِ الْبَشَرِ -
تاريخُ جَمْعِ الْقُرْآنِ :
إِنَّ أَبَا بَكْرِ الصَّديقُ (رض) جَمَعَ الْقُرْآنَ أَوَّلَا بَعْدَ وَفَاةِ النَّبِيِّﷺ وَإِنَّ عُثْمَانَ (رض) فِي عَهْدِهِ جَمَعَهُ وَكَتَبَهُ مُكَمَّلاً فَأَرْسَلَهُ إِلَى الْبِلَادِ الْإِسْلَامِيةِ -
غَرْضُ نُزُولِ الْقُرْآنِ :
أَنْزَلَ اللهُ الْقُرْآنَ لِإِخْرَاجِ النَّاسِ مِنَ الضَّلَالَةِ إِلَى الْهِدَايَةِ، وَمِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ، وَمِنَ الْكُفْرِ إِلَى الْإِسْلَامِ، وَمِنَ الْبَاطِلِ إلَى الْحَقِّ كَمَا قَالَ تَعَالَى : كِتَاب انْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ لِتُخْرِجَ النَّاسِ مِنْ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ"-
الْقُرْآنُ دَسْتُورُ الْحَيَاةِ :
إِنَّ الْقُرْآنَ دَسْتُورُ كَامِل لِلْحَيَاةِ. بَيَّنَ اللَّهُ فِيهِ جَمِيعَ نَواحِي الْحَيَاةِ مِنَ السّيَاسَةِ وَالْإِقْتِصَادِ وَالْحَيَاةِ الْفَرْدِيَّةِ والْأَسْرِيَّةِ وَالْاجْتِمَاعِيَّةِ كُلُّهَا -
فَضْلُ الْقُرْآنِ :
الْقُرْآنُ هُوَ اَفْضَلُ الكُتُبِ السَّمَاوِيَةِ وَأَعْظَمُها أَنزَلَهُ اللهُ تَعَالَى لِهدَايَةِ كَافَةِ الْبَشَرِ. وَإِنَّ الْقُرْآنَ دَستُورُ وَجِيْدُ لِلْمَلَةِ الْإِسْلَامِيةِ وَمَنْ يتْلُو الْقُرْآنَ يُعْطى لِكُلِّ حَرْفٍ عَشْرُ حَسَنَاتٍ، كَمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ (ص) : "مَنْ قَرَأَ حَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللهِ فَلَهُ بِهِ حَسَنَةٌ وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا -
الْقُرْآنُ مُعْجِزَةُ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ:
إِنَّ اللهَ تَعَالَى أَعْطَى رَسُولَهُ ﷺالْقُرْآنَ وَتَحَدَى الْمُخَالِقِينَ أنْ يَأْتُوا بِمِثْلِهِ، فَعَجِزَ فَصَحَاهُ الْعَرَبِ عَنِ الْإِنْيَانِ بمثله. وَإِنَّ اللهَ تَعَالَى قَالَ : "وَإِنْ كُنتُمْ فِي رَيْبٍ مِّمَّا نَزَلْنَا عَلَى عَبْدِنَا فاتُوا بِسُورَةٍ مِنْ مِثْلِهِ، فَقَالُوا : لَيْسَ هَذَا مِنْ كَلَامِ الْبَشَرِ -
وَاجِنَا نَحْوَ الْقُرْآنِ :
وَاجِبُنَا نَحْوَ الْقُرْآنِ أَنْ نَقْرَأَهُ بِتَدَبَّرٍ وَتَفَكَّرٍ وَأَنْ نَتَعْلَمَهُ وَتُعَلَّمَهُ وَنَخْتَارَهُ دَستُورًا لِحَيَاتِنَا -
الْخَائِمَةُ :
عَلَيْنَا أَنْ نَهْتَمَّ بِالْقُرْآنِ وَنُطِيعَهُ حَتَّى تَكُونَ مُسْلِمِينَ فَائِزِينَ، قَالَ الرَّسُولُﷺ : تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّهُ رَسُولِ" -
কুরআনুল কারীম
উপস্থাপনা :
সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি তাঁর অবতারিত কিতাবের মাধ্যমে আমাদেরকে হেদায়াত দান করেছেন। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক নবী কারীম (স)-এর ওপর, যাঁর প্রতি কুরআন নাযিল করা হয়েছে। আর তাঁর পরিবার ও সকল সাহাবীর ওপর এবং কেয়ামত পর্যন্ত তাঁদের অনুসারীদের ওপর।
কুরআনের পরিচয় :
কুরআন হলো জিবরাঈল (আ)-এর মাধ্যমে রাসূল (স)-এর ওপর অবতীর্ণ আল্লাহর কিতাব, যা মাসহাফসমূহে লিখিত এবং তাঁর নিকট হতে ধারাবাহিকতার সাথে সন্দেহাতীতভাবে বর্ণিত।
কুরআন নাযিলের পদ্ধতি :
কুরআন লাওহে মাহফুয হতে দুনিয়ার আসমানে একবারে নাযিল হয়েছে। অতঃপর মুহাম্মদ (স)-এর ওপর পূর্ণ নববী জীবনে মানুষের প্রয়োজন অনুসারে অল্প অল্প করে নাযিল হয়েছে।
কুরআন সংকলনের ইতিহাস :
আবু বকর সিদ্দীক (রা) নবী কারীম (স)-এর ওফাতের পর সর্বপ্রথম কুরআন সংকলন করেন। আর ওসমান (রা) তাঁর আমলে পূর্ণরূপে কুরআন সংকলন ও লিপিবদ্ধ করেন। অতঃপর তা ইসলামী রাষ্ট্রসমূহে প্রেরণ করেন।
কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য :
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন নাযিল করেছেন মানুষকে ভ্রষ্টতা থেকে হেদায়াত, অন্ধকার থেকে আলো, কুফরী থেকে ইসলাম এবং বাতিল থেকে হকের পথে নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, “এটা এমন কিতাব যা আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যেন আপনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসেন।
কুরআন জীবনবিধান :
কুরআন পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। এতে জীবনের সকল দিক যেমন- রাজনীতি, অর্থনীতি, ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন ও সামাজিক জীবনসহ সকল কিছুর বর্ণনা রয়েছে।
কুরআনের কযিলত :
কুরআন সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব। আল্লাহ তায়ালা সকল মানুষের হেদায়াতের নিমিত্ত এটি নাযিল করেছেন। কুরআন মুসলিম জাতির একমাত্র জীবনবিধান। যে ব্যক্তি কুরআন তেলাওয়াত করে, তার প্রতিটি অক্ষরের বিনিময়ে তাকে দশটি করে নেকী প্রদান করা হয়। যেমন রাসূলুল্লাহ (স) এরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ তেলাওয়াত করবে তার জন্য এর বিনিময়ে একটি নেকী সাব্যস্ত হবে, আর এ নেকী অনুরূপ দশ গুণে পরিণত হবে"।
কুরআন রাসূলুল্লাহ (স)-এর মুজিযা :
আল্লাহ তায়ালা রাসুল (স)-কে কুরআন প্রদান করেন এবং বিরোধীদের প্রতি অনুরূপ একটি রচনার চ্যালেঞ্জ করেন। তখন আরবের পণ্ডিতরা অনুরূপ কুরআন রচনা করতে অপারগ হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, “আর তোমরা যদি আমি আমার বান্দার প্রতি যা নাযিল করেছি তাতে সন্দেহ পোষণ কর, তাহলে এর অনুরূপ একটি সূরা রচনা কর"। অতঃপর পণ্ডিতরা বলল, এটি কোনো মানব রচিত গ্রন্থ নয় ।
কুরআনের প্রতি আমাদের কর্তব্য :
পবিত্র কুরআনের প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো আমরা চিন্তা ও গবেষণার সাথে তা পাঠ করব, তা শিক্ষাগ্রহণ করব এবং শিক্ষা দিব এবং আমাদের জীবনের সংবিধান হিসেবে এটাকে গ্রহণ করব।
উপসংহার :
আমাদের জন্য জরুরি হলো কুরআনের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া এবং এর অনুসরণ করা, যেন আমরা সফল মুসলমান হতে পারি। রাসূল (স) ইরশাদ করেছেন, আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যতদিন তোমরা এতদুভয়কে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরবে ততদিন পথভ্রষ্ট হবে না। তা হলো- আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসুলের সুন্নাত।