আমাদের সাইটের নতুন আপডেট পেতে এ্যাপ্স ইন্সটল করে রাখুন Install Now!

আল্লামা নঈমউদ্দীন আলকাদেরী (রহ.) এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি - Biography of Allama Naeem Uddin Al Qaderi (RA)

আল্লামা নঈমউদ্দীন আলকাদেরী (রহ.) এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি - Biography of Allama Naeem Uddin Al Qaderi (RA)
Join our Telegram Channel!

 

আল্লামা নঈমউদ্দীন আলকাদেরী (রহ.) এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

ইসলামের সঠিক মতাদর্শ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন, সুবক্তা, এদেশের সুন্নী মুসলমান আবালবৃদ্ধ বণিতার প্রাণপ্রিয় আলেম, মোজাহেদে আহলে সুন্নাত আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ নঈমুদ্দীন আলকাদেরী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি আজ আমাদের মাঝে নেই। ক্ষণিক কালের জন্য উদিত হয়ে এ উজ্জ্বল নক্ষত্র এদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মুসলিম জনতার অন্তরে আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় নবীর প্রেম ও ঈমানী জজ্‌বার যে প্রদীপ্ত মশাল জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন, তা অতুলনীয়। তাঁর প্রতি আপামর মুসলিম জনতার যে অকৃত্রিম দরদ তা বুঝা গিয়েছিল সেদিন। রোদ্রের প্রখর তাপ উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম জামেয়া আহমদিয়া সুন্নীয়া আলীয়া মাদ্রাসার বিশাল ময়দানে হাজার হাজার দেশ বরেণ্য আলেম, চিকিৎসক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, বহু মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক সহ সর্বস্তরের উপচে পড়া জনগণের নামাজে জানাজা আদায়ের পর মর্মস্পর্শী কান্নার হৃদয় বিদারক দৃশ্যে। কারণ তিনি তাঁর গোটা জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন মহান রাব্বুল আলামীনের একটি আদেশ বাস্তবায়নের জন্যে সে আদেশটি হচ্ছে, তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহবান কর হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে সদ্ভাবে আলোচনা কর। তিনি তাঁর গোটা জীবনকে ব্যয় করেছেন তাঁর সুললিত কণ্ঠে ইসলামের সুন্দর শাশ্বত রূপরেখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আদর্শালোকে মানব সমাজকে পরিচালনা করার জন্য। তিনি এ সংক্ষিপ্ত জীবনে দ্বীন ও মাজহাব তথা সমাজের জন্য অনেক কিছু দিয়ে গেছেন। তাঁর জীবন ছিল এক বিশ্রামহীন কর্ম বীরের মত।

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি: 

তিনি চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানার উত্তর বন্দর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার একান্ত ইচ্ছানুযায়ী তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনের পর চট্টগ্রাম জামেয়া আহমদিয়া সুন্নীয়া আলীয়া মাদ্রাসায় উচ্চ শিক্ষা লাভ করে সর্বশেষ স্তর কামিল হাদীস ও ১৯৮৬ সনে ফিকাহ বিভাগে কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। তিনি ছাত্রাবস্থায় ছাত্র শিক্ষক সকলের একান্ত প্রিয় ছিলেন। অধ্যক্ষ মাওলানা জালাল উদ্দীন আলকাদেরী ও মুফতি শেরে মিল্লাত ওবাইদুল হক নঈমী তাঁকে সবসময় তত্ত্বাবধান করতেন। উল্লেখ্য যে, তিনি ১৯৮৬ সনে ফিকাহ বিভাগে কৃতিত্বের সাথে পাশ করার পর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নীয়া আলীয়া মাদ্রাসার সালানা জলসায় (বার্ষিক সভায়) তাঁকে তৈয়ব শাহ ছাহেব কেবলা ফজিলতে দস্তারবন্দী দান করেন। যখন তাঁকে হুজুর কেবলা ফজিলতে দস্তার দান করছিলেন, তখন হাজার হাজার জনতা তাঁকে মুহুর্মুহু শ্লোগানের মাধ্যমে অভিনন্দিত করে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানান।

কর্ম জীবনে তিনি বিভিন্ন জামে মসজিদে খতিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। পতেঙ্গাস্থ মাইজপাড়া গাউছিয়া সুন্নীয়া এবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও বেশ কয়েক বছর কর্ম জীবনে তিনি বিভিন্ন জামে মসজিদে খতিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। পতেঙ্গাস্থ মাইজপাড়া গাউছিয়া সুন্নীয়া এবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও বেশ কয়েক বছর সুপারিন্টেনডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন এবং সাথে সাথে রাত দিন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামে-গঞ্জে ওয়াজ নছীহত করে জনসাধারণকে আল্লাহর পথে পরিচালিত করার দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়েছিলেন। তাঁর ওয়াজ মাহফিলে বহু দূর দূরান্তের অনেক লোকের সমাগম হতো। তিনি ওয়াজের ক্ষেত্রে ছিলেন এক অকুতোভয় মোজাহিদ। মাজহাবের স্বার্থে যেখান থেকেই ডাক আসতো তিনি সেখানে চলে যেতেন। বহু স্থানে বাতিলপন্থী অনেক আলেমের সাথে বাহাছ করে তাদেরকে সঠিক পথের দিশা দিয়েছেন। তিনি মাঝে মধ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়ের উপর পত্র-পত্রিকায় লিখতেন। তাঁর স্বরচিত একটি কবিতার বই যাতে মহানবী সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং হযরত বড় পীরের শানে লিখিত কবিতা ‘দরুদে জেহাদী' নামে প্রকাশিত হয়।

কাদেরীয়া তরীকার একজন একনিষ্ঠ খাদেম হিসেবেই তাঁর নামের শেষে যুক্ত হয়েছিল আলক্বাদেরী। তিনি হুজুর কেবলা মোর্শেদে বরহক সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন।

দ্বীনি শিক্ষার প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে তিনি অত্যন্ত প্রয়োজন অনুভব করে তার গ্রামে ১৯৮৩ সনে শাহ মোহছেন আউলিয়া তৈয়বীয়া গাউছিয়া সুন্নীয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা ও মাওলানা নঈমুদ্দীন আলকাদেরীর সাথে সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত গভীর। তিনি তাঁর প্রত্যেক মাহফিলে শ্রোতাদেরকে ছাত্রসেনা করার জন্য এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা দেয়ার জন্য হাত উঠাতেন। ওয়াদা নিতেন। বাস্তবিকই এমন অকুতোভয় নিখাদ ভালবাসা সম্পন্ন আলেম খুব কমই ছিলেন।

তিনি পাঁচলাইশ থানার অন্তর্গত কুলগাঁও গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের আলহাজ্ব আবুল বশর মোতাওয়াল্লীর প্রথমা কন্যার সাথে প্রণয় সূত্রে আবদ্ধ হন এবং ৩ কন্যা ও ২ ছেলে সন্তান রেখে যান। তাঁর কর্মময় জীবনের একটানা অবিশ্রান্ত পরিশ্রমের দী দরুণই তিনি এক দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। প্রায় দীর্ঘ নয়মাস রোগ শয্যায় ছিলেন। পরিশেষে এ মহান আলেম সকলের মায়া পরিত্যাগ করে অক্টোবর ১৯৯২ সালে রাত ১২টার সময় মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান। তার ইন্তেকালের সাথে সাথে দেশের মুসলিম জনতা, ওলামা পীর মাশায়েখের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

তাঁর অন্তিম ইচ্ছানুযায়ী তাঁর একান্ত প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ষোলশহর জামেয়া আহমদীয়া সুন্নীয়া মাদ্রাসা ময়দানে পরদিন। বাদে জোহর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত জানাজায় ইমামতি করেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নীয়া আলীয়ার সুযোগ্য অধ্যক্ষ আল্লামা জালাল উদ্দিন আলকাদেরী।


Follow us WhatsApp Channel!
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.