
ভাইভার জন্য কয়েকটি টিপস
অনেকেই আছে যারা ইন্টারভিউ বা মৌখিক পরীক্ষার কথা মনে হলেই শীতের মধ্যেও ঘামতে শুরু করে। তবে চাকরি পেতে হলে প্রত্যেককেই এ ভাইভার মুখোমুখি হতে হয়।আবার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। একটি সফল ইন্টারভিউ হলো একজন চাকরি প্রার্থীর জীবনের সফলতার জন্য অপরিহার্য একটি অধ্যায়। তাই ভাইভা চলাকালীন সময় প্রার্থীকে অবশ্যই কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, যাতে ভাইভাটা সবদিক থেকে সাফল্যমন্ডিত হয়।
নিজেকে যথাসম্ভব সংযত রেখে ধীরস্থির ভাবে প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। নিজেকে প্রকাশ করতে হবে সাবলীলভাবে। ভাইভা বোর্ডে প্রবেশ, বসা, উত্তর দেয়া এবং সেখান থেকে বের হওয়ার সময় প্রার্থীর আচরণ ও কথোপকথন দ্বারা নির্ধারিত হয়। প্রার্থীর সফলতা বা ব্যর্থতা। সুতরাং ভাইভা বোর্ডে যথার্থ আচরণই তোমাকে দিতে পারে কাঙ্ক্ষিত সফলতা । এ সংক্রান্ত কিছু টিপস জানাচ্ছেন পল্লব মুনতাকা ।
১) অনুমতি নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করে সালাম জানাতে হবে। পরীক্ষকগণ বসতে বললে বসতে হবে এবং বসতে না বললে একটু অপেক্ষা করে অনুমতি নিয়ে বসতে হবে। অনুমতি ব্যতীত বসা যাবে না। অনুমতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধন্যবাদ জানাতে হবে। সোজা হয়ে বসবে, পায়ের উপর পা তুলে অথবা পা দুটো আড়াআড়ি করে বসা যাবে না। হাত দুটো টেবিলের উপরে রাখা যাবে না। ভাইভা যারা নিবেন তাদের দিকে সোজাসুজি তাকাবে, মাটির দিকে বা ঘরের কোণ বা ছাদের দিকে তাকাবে না।
২. একজন প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় অন্যদের দিকে তাকাতেও ভুলবে না। অতি সুকৌশলে নিজের বুদ্ধিমত্তা এবং উত্তম গুণাবলী ও জ্ঞানের পরিধি সম্পর্কে পরীক্ষকগণকে ধারনা প্রদানের চেষ্টা করো।
৩. মনোযোগ দিয়ে প্রথমে প্রশ্নটি শোন ও বোঝার চেষ্টা করো। প্রথমবারে যদি প্রশ্নটি বুঝতে না পার তবে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে আর একবার প্রশ্নটি করতে বল।
৪. উত্তর দেয়ার সময় প্রত্যেকটি শব্দ স্পষ্ট করে এমনভাবে উচ্চারণ করো যেন সবাই শুনতে পায় এবং খেয়াল রাখ উত্তরের সাথে যেন তোমার আত্মবিশ্বাস প্রতিফলিত হয়। সময় নষ্ট না করে উত্তর দাও। জানা না থাকলে কালক্ষেপণ না করে দ্রুত বল, দুঃখিত আমার জানা নেই। অগোছালো ভাবে এদিক সেদিক না ঘুরিয়ে যথাযথ উত্তর দিতে হবে। যুক্তির সাথে বক্তব্যকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
৫. আচরণে কোন প্রকার জড়তা রাখা যাবে না। গোমরা মুখে থাকবে না। মুখে হাসি হাসি ভাব রাখ। ভাইভা যারা নিচ্ছেন তাদের সঙ্গে কোন ধরণের তর্কে জড়াবে না। নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধ মত জানানোর আগে বিনয়ের সাথে বলবে- মাফ করবেন বা কিছু মনে করবেন না বলে নাও। কর্কশভাবে প্রশ্নের উত্তর দিবে না। উঁচু গলায় প্রশ্ন এলেও উঁচু গলায় উত্তর দেয়া যাবে না। স্বাভাবিক স্বরে উত্তর দাও ।
৬. মুদ্রাদোষগুলো সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন থাক। গালে হাত বোলানো, চুল ঠিক করা, নাক চুলকানো, কলার ঠিক করা, গলা দিয়ে শব্দ করা বা জামা কাপড় ঠিক করবে না। নিজে নিজে হ্যান্ডশেক করার জন্য আগে হাত বাড়াবে না। নিয়োগকর্তাগণ যদি করমর্দনের জন্য হাত বাড়ান তাহলে মোলায়েমভাবে করমর্দন করো।
৭. আবেগ তাড়িত হয়ে কোন প্রশ্নের উত্তর দিবে না। উত্তর দেয়ার সময় খেয়াল রাখবে, যেন কোন ব্যক্তি, সম্প্রদায়, জাতি, ধর্ম বা রাষ্ট্র সম্পর্কে কোন প্রকার অবমাননাকর বা অপ্রীতিকর কথা বেরিয়ে না যায়।
৮. কোন বিষয়ে অজুহাত না দেখিয়ে এবং কোন তথ্য সম্পর্কে ছলনার আশ্রয় না নিয়ে সততার পরিচয় দাও।
৯. নিজেকে উপস্থাপন করো আকর্ষণীয়ভাবে। যেভাবে কোন পণ্যের দক্ষ বিক্রেতা করে থাকেন।
১০. পরিশেষে বিদায় নেবার সময় সবাইকে ধন্যবাদ দেয়ার পর, সালাম দিয়ে বিদায় নাও।
Assalamu Alaikum Wa Rahmatullah
Greetings!
Provide your feedback.