আমাদের সাইটের নতুন আপডেট পেতে এ্যাপ্স ইন্সটল করে রাখুন Install Now!

ইমামের পিছনে মুক্তাদির কেরাত না পড়ার প্রমাণ (Proof that the muqtadis did not recite the Qur'an behind the Imam)

Join our Telegram Channel!

 
ইমামের পিছে মুকতাদী কুরআন শরীফ পড়া সম্পূর্ণ নিষেধ। কিন্তু গায়েরে মুকাল্লিদ (লা’মাযহাবী) ওহাবীরা মুকতাদীর উপর সূরা ফাতিহা পড়াকে ওয়াজিব মনে করে।

উক্ত নিষেধাজ্ঞার উপর কোরআনুল কারীম, অনেক হাদীস শরীফ, বড় বড় সাহাবায়ে কেরামের অসংখ্য বাণী ও অনেক যৌক্তিক প্রমাণ রয়েছে। এ জন্য আমরা প্রথম পরিচ্ছেদে উক্ত নিষেধাজ্ঞা সাব্যস্ত করেছি। আল্লাহ তা’আলা কবূল করুন।

প্রথম পরিচ্ছেদ

ইমামের পিছে মুকতাদীর জন্য কোরআন শরীফ তিলাওয়াত করা নিষেধ। চুপ থাকাই উচিত। এবার প্রমাণাদির দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক।
কোরআন শরীফ বলছেঃ

وَ اِذَا قُرِىءَ الْقُرْاَنُ فَاسْتَمِعُوْا لَهُ وَ اَنْصِتُوْا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْن

আর যখন কোরআন শরীফ পড়া হয় তখন তা কান লাগিয়ে শোন আর চুপ থাকো। যাতে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়।
স্মর্তব্য যে, ইসলামের প্রাথমিক যুগে নামাযের মধ্যে পার্থিব কথা-বার্তাও বৈধ ছিলো। আর মুক্বতাদীও কোরআন পড়তো। এ আয়াত দ্বারা কথা বার্তা বলতে নিষেধ করা হিয়েছে।

وَ قُوْمُوْا لِلّهِ قَانِتِيْنَ

‘দাঁড়িয়ে যাও আল্লাহ তা’য়ালার অণুগত হয়ে’।
ইমাম মুসলিম ‘বাবু তাহরীমিল কালাম ফিস সালাত’ এবং ইমাম বোখারী ‘বাবু মা-য়ুনহা মিনাল কালাম ফিস সালাত’ এ হযরত যায়েদ বিন আরকাম (রাদ্বি) হতে বর্ণনা করেন-
আমরা নামাযের মধ্যে কথা-বার্তা বলতাম, এক ব্যক্তি তার পাশে দাঁড়ানো তার বন্ধুর সাথে কথা বলছিলো, এমন সময় ‘কূমূ লিল্লাহি কানিতীন’ আয়াতটি নাযিল হয়। এরপর আমাদেরকে চুপ থাকার নির্দেশ দেয়া হলো এবং কথা বলতে নিষেধ করা হলো।
এরপর নামাযে কথা-বার্তা বলা নিষিদ্ধ হলো। কিন্তু মুকতাদী কোরআন তিলাওয়াত করতো। যখন নিম্নোক্ত আয়াতখানা নাযিল হলো তখন মুকতাদীদের জন্য তিলাওয়াত ও নিষিদ্ধ হয়ে গেলোঃ

وَ اِذَا قُرِىَ الْقُرْانُ فَاسْتَمِعُوْا لَهُ وَاَنْصِتُوْ……الخ

অর্থাৎ যখন কুরআন পড়া হবে তখন মনোযোগ দিয়ে শোন আর চুপ থাকো।
‘তাফসীনে মাদারিক’ শরীফে উক্ত আয়াতের তাফসীরে বলা হয়েছেঃ

وَ جَمْهُوْرُ الصَّحَابَةِ عَلى أَنَّهُ فِى اسْتِمَاعِ الْمُؤتَمِّ

“অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরামের অভিমত হলো এ আয়াতটি মুকতাদীর জন্য ইমামের ক্বিরাআত শোনার ব্যাপারেই”।
তাফসীরে খাযিন-এ উক্ত আয়াতের তাফসীরে নিম্নোক্ত রিওয়ায়ত এসেছেঃ

وَ عَنْ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ اِنَّهُ سَمِعَ نَاسًا يَّقْرَ أُوْنَ مَعَ الْاِمَامِ  فَلَمَّا اِنْصَرَفَ قَالَ اَمَا اَنْ لَكُمْ أَنْ تَفْقَهُوْا وَ اِذَا قُرِئَ الْقُرْانُ ………..الخ

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদ্বি.) কিছু লোককে ইমামের সাথে সাথে কিরাআত পড়তে শুনলেন। নামায শেষ হলে তিনি বললেন এখনও কি তোমাদের উক্ত আয়াতের মমার্থ বুঝার সময় আসেনি?
‘তানভীরু মিকয়াস মিন তাফসীরি ইবনি আব্বাস’ শরীফে উক্তি আয়াতের তাফসীরে এসেছে:

وَ اِذَا قُرِئَ الْقُرْانُ فِى الصَّلَاةِ الْمَكْتُوْبَةِ فَاسْتَمِعُوْا لَهُ اِلَى قِرَاءَتِه وَاَنْصِتُوْا بِقِرَاءَتِهِ

যখন ফরয নামাযে কোরআন তিলাওয়াত করা হয় তখন তা তোমরা কান লাগিয়ে শোন। আর কোরআন পাঠ করার সময় চুপ থাকো।
আমাদের উপরোক্ত অনুসন্ধানী আলোচনা থেকে জানা গেলো, ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুকতাদীরা ইমামের পিছনে কিরাআত পড়তো। কিন্তু উক্ত আয়াত নাযিলের পর ইমামের পিছনে কিরাআতের বিধান রহিত হয়েছে।
এবার হাদীস শরীফগুলোর দিকে মনোযোগ দেয়া যাকঃ
হাদীস নং-১: মুসলিম শরীফ, ‘বাবু সুজূদিত তিলাওয়াতি’-এ আতা বিন য়াসার থেকে বর্ণিতঃ

أَنَّهُ سَألَ زَيْدَ اِبْنَ ثَابِتٍ عَنِ الْقِرَاءَةِ مَعَ الْاِمَامِ فَقَالَ لَاقِرَاءَة مَعَ الْاِمَامِ فِي شَىْئٍ

তিনি যায়দ বিন ছাবিত-এর কাছে ইমামের সাথে কিরাআতের হুকুম সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। তিনি বললেন ইমামের সাথে কিছুতেই কিরাআত পড়া জায়েয নেই।
হাদীস নং-২: মুসলিম শরীফ ‘বাবুত তাশাহহুদ’ এ রয়েছে:

فَقَالَ لَهُ أَبُوْبَكَرٍ فَحَدِيْثُ أَبِىْ هُرَيْرَ ةَ فَقَالَ هُوْ صَحِيْحٌ يَعْنِىْ وَ اِذَا قُرِئَ فَانْصِتُوْا

আবূ বকর, সুলায়মানকে প্রশ্ন করলেন, হযরত আবূ হোরায়রা (রাদ্বি.) এর হাদীস কেমন? তিনি বললেন, সহীহ অর্থাৎ এ হাদীস- যখন ইমাম ক্বিরাআত পড়বে, তখন তোমরা চুপ থাকবে’ নিঃসন্দেহে সহীহ।
হাদীস নং-৩: তিরমিযী শরীফে হযরত জাবির (রাদ্বি.) হতে বর্ণিত :

مَنْ صَلَّى رَكْعَةً لَمْ يَقْرَأ فِيْهَا بِأُمِّ الْقُرْانِ فَلَمْ يُصَلِّ اِلَّا أَنْ يَّكُوْنَ وَرَاءِ الْاِمَامِ هذَا حَدِيْثً حَسَنٌ صَحِيْحٌ

অর্থাৎ যে ব্যক্তি নামায পড়লো কিন্তু তাতে সূরা ফাতেহা পড়লো না সে যেন নামায পড়লো না। তবে যদি ইমামের পিছে হয় (তখন তোমরা পড়বে) না। এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদীস নং-৪: ‘নাসাঈ শরীফে হযরত আবূ হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত :

قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّمَا جُعِلَ الْاِمَامُ لِيُؤْتَمَّ لَهُ فَاِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوْا وَاِذَا قَرَأ  فَانْصِتُوْا

“রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেছেন- নিশ্চয়ই ইমাম বানানো হয়েছে তার অনুসরণের জন্যই। যখন তিনি তাকবীর বলবেন, তখন তোমরা ও তাকবীর বলো। আর যখন তিনি কুরআন পড়বেন তখন চুপ থাকো।”
আমরা ২নং হাদীসে মুসলিম শরীফের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছি যে, হযরত আবূ হোরায়রা (রাদ্বি.) এর এ হাদীসটি সহীহ।
হাদীস নং-৫: তাহাবী শরীফে হযরত জাবির (রাদ্বি.) হতে বর্ণিত:

اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ كَانَ لَهُ اِمَامٌ فَقِرَاءَةَ الْاِمَامِ لَهُ قِرَاءَةً

“নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যার ইমাম আছে, ইমামের তিলাওয়াতই তার তিলাওয়াত”।
হাদীস নং ৬-১০: ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) মুয়াত্তা শরীফে ইমাম আবূ হানীফা থেকে, তিনি মূসা ইবনে আবি আয়িশা থেকে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ থেকে, তিনি জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাদ্বি.) থেকে বর্ণনা করেন:

اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ كَانَ لَهَ اِمَامٌ فَقِرَاءَةُ الْاِمَامِ لَهُ قِرَأءَة قَالَ مُحَمَّدَبْنِ مَنِيْعٍ وَاِبْنُ الْهُمَامِ هَذَا الْاِسْنَادُ صَحِيْحٌ عَلى شَرْطِ الشّيْخَيْنِ

“অর্থাৎ নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন- যার ইমাম আছে সে ইমামের ক্বিরাআত হচ্ছে তার ক্বিরাআত। মুহাম্মদ ইবনে মুনী ও ইমাম ইবনুল হুমাম বলেন- এ হাদীসের সনদ বিশুদ্ধ”।
এ হাদীসটি ইমাম আহমদ ইবনে মাজাহ দারু কুত্বন বায়হাকীও বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ১১: তাহাবী শরীফে হযরত আনাস (রাদ্বি.) হতে বর্ণিত :

قَالَ صَلَّى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ اَقْبَلَ بِوَجْهِه فَقَالَ اَتَقْرَءُوْنَ وَالْاِمَامُ يَقْرَأُ فَسَكَتُوْا فَسَألَهُمْ ثَلَاثًا فَقَالُوْا اِنَّا لَنَفْعَلُ قَالَ فَلَا تَفْعَلُوْا

হযরত আনাস (রাদ্বি.) বলেন- একবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নামায পড়ালেন। এরপর তিনি সাহাবায়ে কেরামের দিকে ফিরে বললেন, ইমামের ক্বিরাআতের সময় তোমরাও কি তিলাওয়াত করো? সাহাবায়ে কেরাম চুপ থাকলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ প্রশ্ন তিনবার করলেন। অতঃপর সাহাবায়ে কেরাম উত্তর দিল হ্যাঁ, আমরা তা করি। রাসূলে করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা  তা করো না। (অর্থাৎ তোমরা ইমামের পিছে তিলাওয়াত করবে না)
হাদীস নং ১২: তাহাবী শরীফে হযরত আলী (রাদ্বি.) হতে বর্ণনা করেন:

مَنْ قَرَأ خَلْفَ الْاِمَامِ فَلَيْسَ عَلَى فِطْرَةٍ

‘যে ব্যক্তি ইমামের পিছে, তিলাওয়াত করবে সে নিয়মের উপর নেই।’
হাদীস নং ১৩: দারু কুত্বনী হযরত আলী (রাদ্বি.) হতে বর্ণনা করেন:

أَنَّهُ قَالَ قَالَ رَجُلٌ لِلنَّبِى صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَاَقْرَءُ خَلْفَ الْاِمَامِ اَوْاُنْصِت قَالَ بَلْ اَنْصِتْ فَاِنَّهُ يَكْفِيْكَ

হযরত আলী (রাদ্বি.) বলেন- এক ব্যক্তি হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে প্রশ্ন করলো আমি কি ইমামের পিছে তিলাওয়াত করবো না চুপ থাকবো? রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন বরং চুপ থাকবে আর এটাই তোমার জন্য যথেষ্ট।
হাদীস নং-১৪: দারু কুত্বনূ হযরত শা’বী হতে বর্ণনা করেন:

أَنَّهُ قَالَ قَالَ رَجُلٌ أَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَاقِرَاءَةٌ خَلْفَ الْاِمَامِ

হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন ইমামের পিছনে ক্বিরাআত জায়িয নেই।
হাদীস নং-১৫: ইমাম বায়হাকী ক্বিরাআত এর আলোচনায় হযরত আবূ হোরায়রা (রাদ্বি.) হতে বর্ণনা করেন:

أَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ كُلُّ صَلوَةٍ لَايُقْرَأُ بِأُمِّ الْكِتَابِ فَهِىَ خِدَاجٌ أِلَّاصَلوةً خَلْفَ الْاِمَامِ

নিশ্চয়ই নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)  ইরশাদ করেছেন- যে নামাযের মধ্যে সূরা ফাতিহা পড়া হয়নি তা অসম্পূর্ণ।  তবে ঐ নামায নয় যা ইমামের পিছে পড়া হয়।
হাদীস নং-১৬-২৭: ইমাম মুহাম্মদ মুয়াত্তায়, আবদুর রাযযাক স্বীয় মুছান্নাফে হযরত ওমর (রাদ্বি.) থেকে বর্ণনা করেন-

قَالَ لَيْتَ فِىْ فَمِ الَّذِىْ يَقْرَأُ خَلْفَ الْاِمَامِ حَجرًا

যে ইমামের পিছে তিলাওয়াত করে তার মুখে পাথর হোক।
হাদীস নং-১৮-২৪: ইমাম তাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ, যায়দ বিন সাবিত, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস, জাবির ইবনে আবদুল্লাহ, হযরত আলক্বামা, হযরত আলী মুরতাদ্বা, হযরত ওমর (রাদ্বি.) প্রমুখ সাহাবায়ে কেরাম থেকে পরিপূর্ণ সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন যে, এ সমস্ত হযরাতে কেরাম ইমামের পিছে কিরাআতের সম্পূর্ণ বিরোধী। উনাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, যে ইমামের পিছে তিলাওয়াত করবে, তার মুখে আগুন দেয়া হবে। কেউ কেউ বলেন, তার মুখে পাথর। আবার অনেকে বলেন, তা স্বভাব বিরুদ্ধ। আর আমরা লেখার কলেবর বৃদ্ধির আশংকা না থাকলে ঐ সব রেওয়ায়াত এখানে উল্লেখ করতাম। এ ছাড়া ইমামের পিছে ক্বিরাআতের বিরুদ্ধে অনেক হাদীস শরীফ রয়েছে। আমরা এখানে শুধুমাত্র ২৪ টি হাদীসকে যথেষ্ট মনে করছি। যদি কারো এসব হাদীস অধ্যয়নের ইচ্ছা থাকে তাহলে তাহাবী শরীফ, মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মদ, সহীহ বোখারী শরীফ, আর আমার প্রণীত বোখারী শরীফের হাশিয়া ‘নঈমুল বারী’ ইত্যাদি কিতাব পড়ে দেখতে পারেন।
বিবেকও চায় যে, মুকতাদী ইমামের পিছে তিলাওয়াত না করুক কয়েকটি কারণেঃ
১) নামাযে সূরা ফাতিহা পড়া যেমন জরুরী তেমনি অন্য সূরা মিলানোও জরুরী। মুসলিম শরীফে বর্ণিতঃ

لَاصَلوةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأ بِأُمِّ الْقُرْانِ فَصَاعِدًا

“তার নামায হবে না, যে সূরা ফাতিহা এবং অন্য কিছু (অন্য আয়াত) পড়বে না।”
গায়রে মুকাল্লিদরাও স্বীকার করে যে, মুকতাদী ইমামের পিছনে তিলাওয়াত করবে না। তাহলে সূরা ফাতিহাও তিলাওয়াত না করা চাই। কেননা অন্য সূরার ক্ষেত্রে যদি ইমামের পড়াই যথেষ্ট হয়, তাহলে সুরা ফাতিহার বেলায়ও ইমামের তিলাওয়াত যথেষ্ট হবে।
২) যে ব্যক্তি রুকুতে গিয়ে ইমামের সাথে নামাযে শরীক হয়, সে পূর্ণ রাকআত পেয়ে যায়। যদি মুকতাদীর উপর সুরা ফাতিহা পাঠ করা আবশ্যক হতো, তাহলে সে পূর্ণ রাকআত পেতো না।
দেখুন! এ লোকটি তাকবীরে তাহরীমা বলেনি এবং তাকবীরে তাহরীমার পথে এক তাসবীহ পরিমাণ সময়ও দাঁড়ায় নি। বরং সোজা রুকুতে চলে গিয়েছে। তাহলে[তাদের মতানুযায়ী] সে রাকাআত পায়নি। কেননা তাকবীরে তাহরীমা ও ক্বিয়াম মুকতাদীর ‌উপর ফরজ। যদি এরূপ হতো যে, তার উপর সুরা ফাতিহা ফরয হতো, তাহলে তা পড়া ছাড়া তার রাকাআত হতো না। বুঝা গেলো ইমামের কিরাআত তার জন্য যথেষ্ট। যখন এ মুকতাদীর জন্য কিরাআত প্রয়োজন না হয়, তাহলে অন্যান্য মুকতাদীর বেলায়ও কিরাআত প্রয়োজন নেই।
(৩) যদি মুকতাদীর উপর সূরা ফাতিহা পড়া এবং ‘আমীন’ আবশ্যক হয় তাহলে বলো- যদি ইমাম  মুকতাদীর পূর্বে সূরা ফাতিহা শেষ করে আর মুকতাদী তখনও সূরা ফাতিহার মাঝখানে হয় তাহলে মূকতাদী ‘আমীন’ বলবে কিনা? যদি বলে তাহলে ফাতিহা শেষ করেই ‘আমীন’বলবে। আর যদি না বলে তো হাদীস উল্লেখ করেই জবাব দিন, না দু’বার ‘আমীন’ বলা জায়েয আছে, না সূরা ফাতিহার মাঝখানে ‘আমীন’ বলা বৈধ?
(৪) যদি মুকতাদী সূরা ফাতিহার মাঝখানে হয় আর ইমাম রুকূতে চলে যায় তখন মুকতাদী কি সূরা ফাতিহা অর্ধেক বাদ দিয়ে দেবে, না রুকু বাদ দেবে? জবাব যাই দিন প্রমাণ স্বরূপ হাদীস দেখান। নিজের জ্ঞান ও ধারণা প্রসূত জবাব দিবেন না।
(৫) রাজ দরবারে যখন এক দল লোক যায় তখন সবাই দরবারের শিষ্টাচারিতা-নিয়মকানুন পালন করে। কিন্তু আবেদন-নিবেদন সবাই করে না বরং সবার পক্ষ থেকে দল নেতাই করে।
অনুরূপ নামাযীরাও জামায়াতে নামায পড়ার সময় আল্লাহ তা’আলার সমীপে ঐ দলের মতই উপস্থিত হয়ে তাকবীর তাসবীহ, তাশাহহুদ ইত্যাদি পড়ে ঐ মহান দরবারের রীতি-নীতি সব পালন করবে। কিন্তু কোরআন তিলাওয়াত হলো বিশেষ নিবেদন যা দলেন নেতা তথা ইমামই পেশ করবে।  

-সুত্রঃ জা’আল হক ৩য় খন্ড

Follow us WhatsApp Channel!
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.