বুদ্ধি বাড়ানোর প্রতিযোগিতা - Brainstorming competition

Join Telegram for More Books
বুদ্ধি বাড়ানোর প্রতিযোগিতা - Brainstorming competition

বুদ্ধি বাড়ানোর প্রতিযোগিতা

ফরহাদ সাফায়েতুল কবীর

যেভাবে শুরু

ভালো ছাত্র হতে গেলে কী লাগে? লাগে মেধা। আর মেধা বিকাশে দরকার বুদ্ধি। এখন মানুষের মস্তিষ্কের সবচেয়ে বেশি অর্জনকে অনেকেই মনে করো বুদ্ধি বিকাশ। এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে। পৃথিবীতে যখন প্রতিযোগিতা বাড়ছে তখন মেধাবী হওয়ার জন্য কেউ যদি বাড়তি কোনো উপাদানের সহায়তা নেন তাহলে তাকে কি সৎ বলা যাবে? এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

বর্তমানে সবাই চায় উপরে উঠতে। প্রতিষ্ঠানগত বাস্তবতায় ওপরে ওঠা বলতে বোঝায় অর্থনৈতিক ও মেধায় সামনে এগিয়ে যাওয়া। মেধার পরিচয় হয় ভালো রেজাল্টে ।

বুদ্ধি বাড়াতে প্রতিযোগিতা। শুরু হয়েছে এখন বিজ্ঞানী ডাক্তাররা উঠে-পড়ে লেগেছে কীভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতাকে আরো বাড়ানো যায়। যার ফলে সারা বিশ্বে শুরু হয়েছে এক বিতর্ক, আর তা হলো বুদ্ধি বাড়ানোর জন্য বিশেষ ড্রাগসের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু। সম্প্রতি প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায়, কেমব্রিজের দুই গবেষক নিয়মিত এক বিশেষ ওষুধ নেন।

তারা এটি নেন তাদের বুদ্ধি বাড়ানোর জন্য। তাদের এই স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে এক বিতর্ক চাঙ্গা হয়েছে তা হলো বুদ্ধি বিকাশে এ ধরনের ড্রাগসের সাহায্য নেয়া কতটা জরুরি, পরবর্তী প্রজন্য যদি নিজেদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যায় তাহলে কীভাবে তা সমস্যা তৈরি করবে।

যখন দুজন মেধাবী লোক বিশেষ ড্রাগসের মাধ্যমে নিজেদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানোর কাজ করে তখন স্বাভাবিকভাবেই তরুণ প্রজন্মের অনেকে এ ধরনের চেষ্টা করতে পারে।

যখন এ বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালানো হয় তখন জানা যায়, এ ধরনের আরো ২০ জন মেধাবী নিজেদের মেধা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ড্রাগসের সাহায্য নেয়। বিতর্কটা আরো বেশি জটিল আকার ধারণ করেছে এ কারণে যে বর্তমানে খেলায় পারফরমেন্স বাড়ানোর জন্য অনেকেই বিভিন্ন ড্রাগসের সাহায্য নেয়, কিন্তু তা অবৈধ।

কিন্তু খেলার মতো সেটা কি শিক্ষাক্ষেত্রে কার্যকর? কিছু বিজ্ঞানী এ ব্যাপারে বেশ সতর্ক। তাদের মতে, ওষুধের মূল কাজ হচ্ছে অসুখকে ভালো করা। কোনো মানুষকে অসীম ক্ষমতাবান বানানো ওষুধের কাজ নয়। অনেকেই এ ব্যাপারে একমত যে ওষুধ মানুষের স্বাভাবিক ক্ষমতাকে জটিল করে তোলে। আবার এভাবে মেডিসিনের মাধ্যমে 3 মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানোর ফলে মানুষের মধ্যে একটা বৈষম্য তৈরি হতে পারে, যারা মেডিসিন নেয় আর যারা নেয় না।

আবার অনেক বিজ্ঞানী এও বলেছেন, কোনো কোনো মেডিসিনের মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়ার সামর্থ্য থাকতে পারে, কিন্তু তা অনেক সময় ভুলভাবে এবং বিপজ্জনক কাজে পরিচালিত হতে পারে।

কেউ কেউ বলেছেন খেলা আর শিক্ষা এক নয়। অনেকে নিছকই নিজেদের কাজের অবসাদ কাটানোর জন্য এক ধরনের উদ্দীপক মেডিসিন ব্যবহার করে। মেডিসিন দিয়ে মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানো ব্যাপারটি বাড়াবাড়ি। 

শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শেখা, অভিজ্ঞতা অর্জন এবং লেখা। এখন কেউ যদি কারো ভালো ফল পাওয়ার জন্য কোনো মেডিসিন ব্যবহার করে তাহলে সেটা নেতিবাচক কিছু নয়। কিন্তু এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব আছে কি না তা পরীক্ষা করা দরকার। তবে অনেক বিজ্ঞানী এ ধরনের মেডিসিন ব্যবহারের পক্ষে নয়। কারণ এটি মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতা সাময়িকভাবে বাড়ায় বটে কিন্তু তা আবার মস্তিষ্ককে জল করে তুলতে পারে। কারণ এর পরে দেখা যায় অনেকে মেডিসিনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এর সুফল ও কুফল জানতে আরো গবেষণার প্রয়োজন।

অতীতকাল থেকে মানুষ শিক্ষালাভের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। তার জন্য সে তৈরি করেছে খাদ্য তালিকা থেকে শুরু করে নানা ভেষজ। তবে অতীতকালে জ্ঞান লাভ ছিল নিছকই চর্চা এবং নিজেকে বোঝার জন্য, বর্তমানে শিক্ষা শুধু জ্ঞানের বিষয় নয়। এ শিক্ষা লাভের মধ্য দিয়ে সমাজে নানাবিধ অর্জন তৈরি হয়। যার ফলে ভালো ছাত্র হওয়ার জন্য এক ধরনের প্রতিযোগিতা চলে।

অনেকে রাত জেগে কাজ করার জন্য এক ধরনের মেডিসিন নেয়, কারণ তাকে এ বাজারে টিকে থাকতে হবে, আরো ভালো রেজাল্টের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

এ পক্ষের লোকেরা বলেছেন সমাজ তাদের সমমান করে যারা সমানে এগিয়ে যায়। এখন প্রত্যেকটি সংস্কৃতি চায় সেরা মানুষটিকে যে কি না তার সবচেয়ে বেশিটা দিতে "পারবে। এখন কোনো মানুষ যদি মেডিসিন গ্রহণ করে তার সেরাটা দিতে পারে তাহলে ক্ষতি কি? সে তো আর অন্যের ক্ষতি করছে না।

তারপরেও সংখ্যাগরিষ্ঠ মত কৃত্রিমভাবে মেডিসিন নিয়ে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানোর বিপক্ষে। কারণ কৃত্রিমতার শেষ পরিণতি কী হতে পারে তা এখনো বিজ্ঞান জানে না।

আমাদের দেশে মেধা বিকাশে বা স্মৃতিশক্তি ধরে রাখার জন্য নানা ধরনের সালসা এবং চ্যাবনপ্রাশ খাওয়া হয়। তবে স্বাভাবিক উপায়েও মস্তিষ্কের ব্যায়াম করার মধ্য দিয়ে মাথার ক্ষমতা বাড়ানো যায়।
 মস্তিষ্ক চর্চা বা স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য কয়েকটি সহজ পদ্ধতি, যা প্রাকৃতিক।

১. মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ধাঁধা, ক্রসওয়ার্ড ও সুডোকো খেল। তবে খেলার সময় নিজেকে যথেষ্ট সময় দাও।
২. সকালে উঠে চোখ বন্ধ করে গোসল করো এবং দাঁত মাজ সেই হাত দিয়ে যে হাতটি তুমি সচরাচর কম ব্যবহার করো। ৩. আমাদের দেশের বেশিরভাগ লোকই ডানহাতি কাজেই বাম হাতে ব্রাশ করতে পার।
৪. যারা পড়তে ভালোবাসে পড়।
৫. কাজের সময় নন ডমিনেটিং হ্যান্ড বা সচরাচর যে হাতটি ব্যবহার করো না সেই হাতটি ব্যবহার করো।
৬. খাবারের সময় চোখ বন্ধ করে খাবারের স্বাদ গন্ধ অনুভব করে খাও ।
৭. শঙ্কা নিয়ে জীবন কাটাবে না, মনে রাখবে ভয় শুধু ভয় ছাড়া আর কিছুই দেয় না।
৮. যে জিনিসটি মনে রাখতে চাও তাকে সহজ করে ভাব।
৯. সুষম খাদ্য গ্রহণ করো এবং পরিমিত ও নিয়মিত আহার করো।
Tags

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!